বিগত কয়েক বছর হল ‘ফ্যাশন টেকনোলজি’ শব্দটি বিশ্বের সকল ফ্যাশন বোদ্ধা এবং ভোক্তা সাধারণের চিন্তার মনিকোঠায় ‘কল্পনাময় বুদ্ধিদীপ্ত জগত’ এর একটা স্থান দখল করে ফেলেছে।
একটু পিছনে ফিরে তাকালে দেখব যে ২০১৬-১৭ সালের দিকে একটা ফ্যাশন টেকনোলজির অভূতপূর্ব উত্থানের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করে। হাজার খানেক মিট-আপ গ্ৰুপ, শত রকমের টেক স্টার্ট-আপ, প্রতিদিন নতুন টেকনোলজির একটা চাঞ্চল্যকর খবর, ফ্যাশন প্রযুক্তি শীর্ষক কল্পনাময় জগৎ কে পার্থিব রুপ প্রদান করে দেখিয়ে দেয়া। মানে একটা নতুন ট্রান্সফরমেশন বা আন্দোলন যা 'ফ্যাশন টেক' বা 'ফ্যাশটেক' নামেও সর্বাধিক ভাবে পরিচিতি পায়। সকল ধরণের আলোচনা গুলো খুব দ্রুততার সাথে পূর্ণ অবয়বে আবির্ভুত হতে শুরু করে এবং পুরাতন সকল ধ্যান ধারণা আলোচনা কে যে না ভেঙে গুড়িয়ে দিতে থাকে।
ফ্যাশন টেক আন্দোলন এমন উচ্চতায় পৌঁছে যায় যে নতুন ধারণার 'ফ্যাশন টেক গুরু' কনসেপ্ট টা আবির্ভূত হতে শুরু করে, এই ধরণের প্রবণতার দিকে সাধারণ ভোক্তাগণ ও দারুণভাবে ঝুকে পড়তে শুরু করে। তাদের কাছে অন্যের দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে, সকলের জন্য নির্মিত, গণ-পোশাক না পড়ে, নিজের মনের মত ফ্যাশন খুঁজে নেয়াকে অনেক বেশি আনন্দদায়ক মনে করতে শুরু করে। তার মানে এতদিন ধরে এটাই ছিল তার সুপ্ত বাসনা কিন্তু ফ্যাশন জগতের ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন এর যাঁতাকলে সেই বাসনা বিকশিত হয়নি। এবং ফ্যাশন শিল্পকে টিকে থাকার জন্য এই নতুন পরিবর্তনের প্রয়োজন ছিল।
টেক্সটাইল এপারেল ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি যে কি পরিমান দ্রুততার সাথে নিজের অবস্থান ও উৎকর্ষতার পরিবর্তন করছে তার কতটুকু আমরা খোঁজ রাখছি। সেই অনুসারে কতুটুকু নিজের আপডেট করছি এবং হালনাগাদ সকল টেকনোলজি ও থীমের সাথে তাল মেলানোর জন্য পুরো ইন্ডাস্ট্রি জুড়ে কি ধরণের প্রস্তুতি ও সচেতনতার প্রয়োজন তা নিয়ে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি বোদ্ধাগণের অনেক গুলো কাজ করতে হচ্ছে।
আমরা বিশ্বের নামকরা ফ্যাশন শিল্পের প্রধান রপ্তানী কারক দেশ তাই আমাদের এই ব্যাপারে নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে অনেক গুলো লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে এবং নেতৃত্বের ভূমিকায় আসীন হতে হবে। আমাদের এই আলোচনায় বর্তমান সময়ের সকল আলোচিত শিল্প বিপ্লবের ট্রান্সফরমেশন মূলক বিষয় গুলো নিয়ে একটা আলোচনা করার চেষ্টা করব।
🗣 প্রোডাক্ট ডিজাইনিংয়ে অভিনবত্ব।
🔹আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স যখন ডিজাইন পার্টনার হয়ে কাজ করে।
🔹 ব্র্যান্ড ইনফ্লুয়েনচে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার বাড়ছে।
🗣 উৎপাদন ব্যবস্থাপনায় উৎকর্ষতা।
🔹সিজনের আর কোন বালাই নাই। ৫২ টা সিজনের জনপ্রিয়তা।
🔹দ্রুততার সাথে অর্ডার পুনরাবৃত্তি ঘটানো এবং উৎপাদন করা।
🔹ফ্যাশন সাপ্লাইচেইন ব্যবস্থাপনার ডিজিটাল সংস্করণ।
🔹থ্রীডি প্রিন্টিংয়ের মাধ্যমে পার্সোনালাইজ্ড এপারেল প্রোডাক্টস তৈরিতে অভিনবত্ব।
🔹উৎপাদন কারখানায় নানা ধরণের রোবোটিক প্রসেসের অনুপ্রবেশ ঠেকানো যাচ্ছেনা।
🗣 ইনভেন্টরি এবং ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসায় আধুনিকত্ব।
🔹আরএফআইডি টেকনোলজির মাধ্যমে যাচাই বাছাই, অটোমেশন এবং অনলাইন ইন্টিগ্রেশন সহজ সাধ্য হয়ে উঠেছে।
🔹ফ্যাশন সাপ্লাই চেইনে ব্লকচেইন টেকনোলজির ব্যবহার বাড়ছে।
🔹পোশাক ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা আনুপাতিক হারে কমে আসছে।
🔹ডাইরেক্ট টু কনজ্যুমার বিজনেস মডেল এর উত্থান।
🔹ক্লদিং এজ আ সার্ভিস চেতনার উত্থান পর্ব ।
🔹অটোমেটেড ওয়্যারহাউজ।
🗣 রিটেইল এবং ভার্চুয়াল মার্চেন্ডাইজিং।
🔹এ আর/ভি আর এর মাধ্যমে অনলাইন এবং শোরুমের অভিজ্ঞতা।
🔹ডিজিটাল ফ্যাশন স্টাইলিস্ট ব্যক্তি স্বাতন্ত্র অনুযায়ী কাজ করা।
🔹ফিনটেক এবং ফ্যাশন শিল্পের যৌথ প্রযোজনা।
🔹রিসেলিং মার্কেট প্লেসের প্রসার।
🔹অমনি-চ্যানেল ক্লায়েন্টেলিং সেবা নিশ্চিতকরণ।
🔹এপারেল সামগ্রী উৎপাদনে থ্রীডি স্ক্যানিং এর ব্যবহার।
🗣 ফ্যাশন শিল্পে টেকসই ও পরিবেশবান্ধব সচেতনতা মূলক কার্যক্রম গুলোর ক্রমাগত চাপ বৃদ্ধি।
🔹রি-সেল প্ল্যাটফর্ম গুলোকে সাস্টেইনেবিলিটির বিকল্প মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।
🔹সঠিক ডিমান্ড ফোরকাস্টিং এর মাধ্যমে ওয়েস্টেজ কমিয়ে আনা।
🔹রিসাইকেল করার মত পোশাক এবং নতুন ধরণের রিসাইকেলিং প্ল্যান্ট।
🔹পরিবেশ বান্ধব টেক্সটাইল ম্যাটেরিয়াল এর উদ্ভাবন।
🔹শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কিভাবে সার্কুলারিটি নিশ্চিত করা যায় তা চিন্তা চেতনায় ধারণ করতে হবে।
🗣 এরপর আর কি ধরণের হাই-টেক ফ্যাশন এর অভিনবত্ব আমাদের অভ্যস্ত করে তুলবে।
🔹পরিধানযোগ্য হাই-টেক ফ্যাশন।
🔹ভার্চুয়াল ফ্যাশন।
🔹ডিজিটাল টুইন।
🔹পোশাক শিল্পে থ্রীডি স্ক্যানিং
🔹অভিনব টেকনোলজির নতুন ধরণের ফ্যাব্রিকস।
🔹সিন্থেটিক মিডিয়া বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স নির্ভর কন্টেট তৈরী।
🔹ক্রিপ্টোকারেন্সি
🔹লাইভস্ট্রিম শপিং।
🗣 আমার প্রশ্ন হল পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থানরত বাংলাদেশ ঠিক কতখানি প্রস্তুত !
0 comments:
Post a Comment